Aopurbo Education family is an E-Education Online service.

Lifestyles লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Lifestyles লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৯

হাইপ্রেশার রোগীর রক্ত চাপ বেড়ে গেলে তখন করণীয় কি কি?

অক্টোবর ১০, ২০১৯ 0
হাই প্রেশার একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। এর কারনে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের হঠাৎ করে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে শারীরিক নানান ঝুঁকি বেড়ে যায়। রক্তচাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে কি করতে হবে সে বিষয়ে আসুন জেনে নিই।
হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। এর কারণে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে অধিক বয়সী ব্যক্তিদের হঠাৎ করে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে শারীরিক নানান ঝুঁকি বেড়ে যায়। রক্তচাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে ও রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয় বিষয়ে আসুন বিস্তারিত জেনে নিই।
হাইপ্রেশার  রোগীর রক্ত চাপ বেড়ে গেলে তখন করণীয় কি কি


হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কি?
যদি কারও উপরের রক্তচাপ মাত্রা বা সিস্টোলিক রিডিং ১৪০ বা তার বেশি এবং নিচের রক্তচাপ মাত্রা বা ডায়াস্টোলিক রিডিং ৯০ বা তার বেশি পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ আছে বলে ধরে নেয়া হয়।

রক্তচাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে কি করতে হবে?
অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোন কারণ থাকে না। কিছু ক্ষেত্রে কিডনির অসুখ , অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির অসুখ, যেমন থাইরয়েড গ্রন্থির রোগ ইত্যাদির কারণে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। সাধারণত যাঁরা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন, স্থূলকায় কিংবা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বেশি দেখা যায়। কিন্তু তারপরও হঠাৎ করেই অনেক সুস্থ ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় পড়তে পারে।
কোন সুস্থ ব্যক্তির রক্তচাপ হঠাৎ করে বেড়ে গেলে উক্ত ব্যক্তিকে তাৎক্ষনিকভাবে অবশ্যই বিশ্রাম নিতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে মাথায় পানি দিয়ে বা বরফ দিলে আরাম পাওয়া যায়। প্রেশার কমানোর জন্য অনেকে তেতুলের শরবত খেয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ ইসব পন্থা কাজে দেয়না। তাই এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং তার দেয়া ওষুধ খেতে হবে। আর যাদের পূর্ব থেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদেরও যদি হঠাৎ করে রক্ত চাপ বেড়ে যায় তাহলে অস্থির না হয়ে বিশ্রাম গ্রহন করতে হবে। মাথায় পানি বা বরফ ব্যবহারে সাময়িক উপশম পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রক্তচাপ কমানোর জন্য নিজে থেকে কোনো ওষুধ গ্রহণ না করাই ভালো।
হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানোর উপায়সমুহ
বংশগত উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের তেমন ব্যবস্থা আবিষ্কৃত না হলেও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। তাই যেসব বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেগুলোর ব্যাপারে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত। নিম্নে এইরকম কতিপয় নিয়মাবলী আলোচনা করা হলো।
১। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো
অতিরিক্ত ওজন উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। এজন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। একবার কাংখিত ওজনে পৌঁছালে সীমিত আহার এবং ব্যায়াম অব্যাহত রাখতে হবে। ওষুধ খেয়ে ওজন কমানো বিপজ্জনক। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওজন কমানোর ওষুধ না খাওয়াই ভালো।
২। খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা
কম কোলেস্টেরল ও চর্বি যুক্ত খাবার যেমন, খাসি বা গরুর গোস্ত, কলিজা, মগজ, গিলা, ডিম কম খেতে হবে পারলে বাদ দিয়ে দিতে হবে। সুষম খাবার নিশ্চিত করতে কম তেল দিয়ে রান্না করা খাবার, ননী মুক্ত দুধ, উদ্ভিজ্জ তেল যেমন সয়াবিন, ভুট্টার অথবা সূর্যমুখীর তেল খাওয়া যেতে পারে। রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি রক্তচাপ ঠিক রাখতেও রসু্নের ভুমিকা রয়েছে। তাই নিয়মিত রসুন খাওয়া যেতে পারে। অধিক আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উত্তম । আটার রুটি ও ভাত পরিমাণ মতো খেতে হবে।
৩। খাবারে লবণ নিয়ন্ত্রণ করা
অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। লবণ আমাদের শরীরের বাড়তি পানি ধরে রাখে ফলে রক্তের ভলিউম বা পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। বাড়তি লবণ শরীরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধমনীর সংকোচনও বাড়িয়ে দেয় । ফলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায় । তাই তরকারিতে প্রয়োজনীয় লবণের বাইরে অতিরিক্ত লবণ না খাওয়াই ভালো।
৪। নিয়মিত ব্যায়াম করা
নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য অর্জন হয় যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় সহায়ক। ব্যায়াম ওজন কমাতে সাহায্য করে, শরীর ও মনকে সতেজ রাখে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তাই সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটাচলা করা, সম্ভব হলে একটু দৌড়ানো, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি করতে হবে। অফিস কিংবা বাসায় লিফটে না চড়ে সিঁড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫। ধূমপান  তামাক পাতা বর্জনঃ
ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ দেখা দেয়। তাই নিজে ধূমপান থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি ধূমপায়ীদের সংস্পর্শ থেকেও দূরে থাকা উচিত। তামাক পাতার ব্যবহারের সঙ্গেও হৃদরোগ এবং ষ্ট্রোকের গভীর সম্পর্ক আছে । তাই তামাক পাতা, জর্দ্দা, গুল লাগানো ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।

৬। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা :
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তাদের অবশ্যই সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৭। শারীরিক  মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
যেকোন শারীরিক ও মানসিক চাপ পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে। এজন্য নিয়মিত বিশ্রাম, হাসিখুশি থাকা,সময় মতো ঘুমানো, শরীরকে অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকে বিশ্রাম দেওয়া উচিত। হবে।মানসিক শান্তি পাওয়া এবং মন প্রফুল্ল রাখতে নিজের শখের কাজ করা, নিজ নিজ ধর্মের চর্চা করা যেতে পারে ।

৮। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা
কোন সমস্যা না থাকলেও নিয়ম করে মাঝে মধ্যে যেমন বছরে এক-দুই বার অবশ্যই রক্তচাপ মাপতে হবে। এর ফলে আপনি উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত কিনা তা প্রথম থেকেই বোঝা যাবে। নিয়মিত মাথা ব্যাথা, চোখ ব্যাথা, শারীরিক দূর্বলতা ইত্যাদি সমস্যায় অবহেলা করা উচিত নয়। অনেক সময় নিম্ন রক্তচাপের কারনেও শরীরে দুর্বল ভাব হতে পারে। এমন হলে যথাশীঘ্র ডাক্তারের কাছে গিয়ে রক্তচাপ পরীক্ষা করে তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করা উচিত। তাই উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপ ধরা পড়া মাত্রই তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং জটিল রোগ বা প্রতিক্রিয়া হতেও রক্ষা পাওয়া যায়। 

আপনার একটু যত্ন আর কিছু ভালো অভ্যাস এই নীরব ঘাতক হৃদরোগের কবল থেকে আপনাকে অনেক দূরে রাখতে পারে। তাই আজ থেকেই সচেতন হয়ে উঠুন এবং উচ্চ রক্তচাপের বিভিন্ন ঝুঁকি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন।
অহরহ অনেকের মুখে শুনে থাকবেন হঠাৎ করেই নাকি প্রেসার ওঠানামা করছে। জেনে রাখা ভালো এটি মোটেও কোনো ভালো লক্ষণ নয়। একজন মানুষ যদি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন তাহলে অবশ্যই তার প্রেসার, পালস ও ওজন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকতে হবে।
যেসব লক্ষণে বুঝবেন প্রেসার ওঠানামা করছে
সাধারণত প্রেসার লো হলে মাথা ঘোরানো, ক্লান্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড় করা, অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা ও স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। অতিরিক্ত ঘাম, ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া, দেহের ভেতরে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে যেমন: রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে, শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত বা দুর্ঘটনার ফলে রক্তপাত ঘটলে এবং অপুষ্টিজনিত কারণেও লো ব্লাড প্রেসার দেখা দিতে পারে।
আবার গর্ভবতী মায়েদের গর্ভের প্রথম ৬ মাস হরমোনের প্রভাবে লো প্রেসার হতে পারে। এ সময় মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া, মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা, চোখে অন্ধকার দেখা, ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, খুব বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া, অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদকম্পন, নাড় বা পালসের গতি বেড়ে যায়।
হঠাৎ প্রেসার বেড়ে গেলে কী করবেন?
শাকসবজি, ফল ও শস্যদানা
হঠাৎ প্রেসার বেড়ে গেলে কিছু খাবার আপনি খেতে পারেন। বেশি ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায় দানা শস্য বা গোটা শস্য, বিচি জাতীয় খাবার, বাদাম, শিমের বিচি, ডাল, ছোলা, লাল চালের ভাত, লাল আটা, আলু, সবুজ শাকসবজি, টমেটো, তরমুজ, দুধ ও দই ইত্যাদি।এসব খাবারে বেশ উপকার পাবেন।
কম চর্বিযুক্ত খাবার
হঠাৎ প্রেসার বেড়ে গেলে কম চর্বিযুক্ত দুধ বা চর্বিবিহীন দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার প্রতিদিন খেতে হবে ২ থেকে ৩ সার্ভিং। এক সার্ভিং দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার মানে আধা পাউন্ড বা এক গ্লাস দুধ অথবা এক কাপ দই।
টুকরো করে আধাকাপ ফল
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা ফল খেতে পারেন।টুকরো টুকরো করে কাটা আধাকাপ ফল কিংবা মাঝারি সাইজের একটা আপেল বা অর্ধেকটা কলা অথবা আধাকাপ ফলের রস এতে হবে ফলের এক সার্ভিং। ফলের রসের চেয়ে আস্ত ফলই ভালো।
শাকসবজি ৪ থেকে ৫ সার্ভিং
শাকসবজি প্রতিদিন প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ সার্ভিং। শাকসবজির এক সার্ভিং মানে এক কাপ কাঁচা শাক বা আধাকাপ রান্না করা শাক।
দানা শস্য ৭ থেকে ৮ সার্ভিং
দানা শস্য প্রতিদিন দরকার ৭ থেকে ৮ সার্ভিং। দানা শস্যের এক সার্ভিংয়ের উদাহরণ হলো এক স্লাইস রুটি অথবা আধাকাপ ভাত বা এক কাপ পরিমাণ গোটা দানা শস্য।
বিচি জাতীয় খাবার
বিচি জাতীয় খাবার প্রতি সপ্তাহে প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ সার্ভিং। বিচি জাতীয় খাবারের এক সার্ভিংয়ের উদাহরণ হলো এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ বাদাম বা আধাকাপ রান্না করা শিম বা মটরশুঁটি।
হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে কী করবেন?
ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ মানবদেহে রক্ত সঞ্চালনে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। মানবদেহে রক্তচাপের একটি স্বাভাবিক মাত্রা আছে। তার ওপর ভিত্তি করেই উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার ও নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করা হয়। উচ্চ রক্তচাপের মতোই নিম্ন রক্তচাপও কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকর। লো ব্লাড প্রেসারের আরেক নাম হাইপোটেনশন।
চিকিৎসকের মতে, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০-৮০। অন্যদিকে রক্তচাপ যদি ৯০-৬০ বা এর আশপাশে থাকে তাহলে লো ব্লাড প্রেসার হিসেবে ধরা হয়। প্রেসার যদি অতিরিক্ত নেমে যায় তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃদপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না তখন এ রোগ দেখা দেয়। আবার অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
আসুন জেনে নেই হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে কী করবেন।
লবণ-পানি
লবণ রক্তচাপ বাড়ায়। কারণ এতে সোডিয়াম আছে। তবে পানিতে বেশি লবণ না দেয়াই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয়, এক গ্লাস পানিতে দুই চা-চামচ চিনি ও এক-দুই চা-চামচ লবণ মিশিয়ে খেলে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের চিনি বর্জন করাই ভালো।
কফি-হট চকলেট
হঠাৎ করে লো প্রেসার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। স্ট্রং কফি, হট চকোলেট, কমল পানীয়সহ যে কোনো ক্যাফেইনসমৃদ্ধ পানীয় দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। আর যারা অনেক দিন ধরে এ সমস্যায় ভুগছেন, তারা সকালে ভারি নাশতার পর এক কাপ কফি খেতে পারেন।
বিটের রস
বিটের রস হাই ও লো প্রেসার দুটোর জন্য সমান উপকারী। এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।
বাদাম
লো প্রেসার হলে পাঁচটি কাঠবাদাম ও ১৫ থেকে ২০টি চিনাবাদাম খেতে পারেন। এটা প্রেসার বাড়াতে সহায়তা করে।
পুদিনা
ভিটামিন ‘সি’, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্যান্টোথেনিক উপাদান যা দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানসিক অবসাদও দূর করে পুদিনা পাতা। এর পাতা বেটে নিয়ে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
যষ্টিমধু
আদিকাল থেকেই যষ্টিমধু বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ যষ্টিমধু দিয়ে রেখে দিন। ২-৩ ঘণ্টা পর পান করুন। এছাড়া দুধে মধু দিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
স্যালাইন
শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই প্রেসার বেড়ে যায়। লো ব্লাড প্রাসারে খাবার স্যালাইন সবচেয়ে উপযোগী এবং তাৎক্ষণিক ফলদায়ক।

বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৯

জাম্বুরার ঔষধি গুনাগুণ ও নানাবিধ উপকারিতা

অক্টোবর ০৯, ২০১৯ 0
জাম্বুরার ঔষধি গুনাগুণ ও নানাবিধ উপকারিতা

ভিটামিন 'সি'-সমৃদ্ধ দেশি ফল জাম্বুরা। বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। কোনো জাতের ভেতর লাল টকটকে, কোনোটির ভেতর আবার সাদা। কোনোটির স্বাদ মিষ্টি আবার কোনোটির স্বাদ। এর খাদ্য উপাদান যাদের গ্যাসিডিটি বা গ্যাস আছে তাদের জন্য বেশ উপকারী।
পুষ্টিগুণ : - প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরার মধ্যে ক্যালোরি আছে ৩৭ কিলো ক্যালোরি, শর্করা ৯.২ গ্রাম, মুক্ত চিনি থাকে ৭ গ্রাম, সামান্য খাদ্যআঁশ, প্রোটিন ও ফ্যাট বর্তমান। বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণ ১২০ মা.গ্রা., ভিটামিন ৬০ গ্রাম, ভিটামিন 'বি'ও থাকে। ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও স্থুলকায়দের জন্য খুবই উপকারী ফল।
   

 চলুন জেনে নিই উপকারিতা...
১) এসিডিটি বা গ্যাস প্রতিহত করে।
২) বায়োফ্লভনয়েড বেশি থাকায় ব্রেস্ট ক্যান্সারের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৩) ভিটামিন 'সি' বেশি থাকায় রক্তনালির সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪) ডায়াবেটিস, জ্বর, নিদ্রাহীনতা, মুখের ভেতরে ঘা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
৫) ওজন কমানোয়ও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৬) রক্ত পরিষ্কারের ক্ষমতা থাকায় দেহে কোনো ধরনের বিষাক্ত উপাদান প্রবেশ করলে ধ্বংস করতে পারে।
৭) প্রতিদিন এক গ্লাস করে বাতাবি লেবু জুস করে খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।


জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু একটি উপকারি ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফল। এটি ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভালো উপকার পাওয়া যায়। জাম্বুরা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। জাম্বুরার বৈজ্ঞানিক নাম citrus maxima আর ইংরেজি নাম Pomelo। বাংলাদেশে জাম্বুরা বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন বড় লেবু, বাদামি লেবু, ছোলম ইত্যাদি। যত প্রকার লেবু আছে তার মধ্যে জাম্বুরা সর্বাপেক্ষা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। টক-মিষ্টি রসাল ফল জাম্বুরা প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর।
জাম্বুরা পটাসিয়ামের ভালো উৎস। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’ ছাড়াও অন্যান্য ভিটামিনের মধ্যে পাইরিডক্সিন, ফলিক এসিড ও থায়ামিন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় রয়েছে এতে। সামান্য পরিমাণে ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও কপার রয়েছে। নানা রকম ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসে সমৃদ্ধ এই ফল এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এগুলোর মধ্যে নারিঞ্জেনিন, ফ্ল্যাভোনয়েড ও নারিঞ্জিন উল্লেখযোগ্য। জাম্বুরাতে আরো রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপেন, লিউটিন ও জ্যান্থিন। আসুন জেনে নিই জাম্বুরার গুনাগুণ-
রোগ প্রতিরোধ:
জাম্বুরাতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। এটি রক্তনালির সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ডায়াবেটিস, জ্বর, নিদ্রাহীনতা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে জাম্বুরা। নিয়মিত জাম্বুরা খেলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয় ও পেটের নানা রকম হজমজনিত সমস্যার প্রতিকার হয়।
হজম সমস্যায়:
বাতাবি লেবুতে রয়েছে প্রচুর আঁশ। এটি খাদ্যের সঠিক পরিপাকে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিণ্য ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দূর করে। এর আঁশ পরিপাকতন্ত্রের ক্রিয়া সচল রাখে ও সঠিক মাত্রায় পরিপাক রস নিঃসৃত করে। ফলে খাদ্যের সর্বোচ্চ পরিপাক হয় এবং হজমের সমস্যা দূর করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ:
বাতাবি লেবু আন্ত্রিক, অগ্ন্যাশয় ও স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এর লিমোনয়েড নামক উপকরণ ক্যানসারের জীবাণুকে ধ্বংস করে ও এর আঁশ মলাশয়ের ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
ওজন হ্রাস:
বাতাবি লেবুতে রয়েছে প্রচুর আঁশ। এটি দেহের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত জাম্বুরা গ্রহণে শরীরের ওজন কমে।
রক্তচলাচল বৃদ্ধি:
জাম্বুরাতে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে। এটি আমাদের ধমনির আয়তন বৃদ্ধি করে রক্ত চলাচলের পথকে সুগম করে। ফলে দেহের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছানো সহজ হয়, যা হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ কমায় এবং স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও অ্যাথেরো সক্লেরোসিসের আশঙ্কা হ্রাস করে।
মজবুত হাড়:
আমাদের দেহে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়ামের অভাব হলে অস্টিওপোরোসিসসহ হাড়ের নানাবিধ রোগ দেখা দেয়। জাম্বুরাতে এই খনিজ উপাদানসমূহ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।
বুড়িয়ে যাওয়া রোধ:
নিয়মিত জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু খাওয়া হলে অকাল বার্ধক্যের চিহ্নসমূহ হতে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া জাম্বুরায় স্পারমেডিন নামক একটি বিশেষ উপাদান রয়েছে। এটি বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।

রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

মেহেদির পাতার বিশেষ গুণাগুণ

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯ 0

মেহেদির পাতা:
 ছবি: মেহেদির পাতা
মেহেদির পাতা দেখতে সবুজ হলেও এর পাতা বাটলে লাল রং হয়। ইহা প্রকৃতির এক অনবদ্য দান। মেহেদী গাছে রয়েছে এন্টি ফাঙাল, এন্টি মাইক্রোবিয়াল, এন্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টিইনফ্লেমেটরী, কুলিং, হিলিং ও সিডেটিভসহ অনেক গুনাগুণ যামানব দেহ ও মনের বিভিন্ন রোগ প্রশমনকারী।

তবে দেখাযাক মেহেদীর যত ভেষজ গুণাগুণ 
জন্ডিসঃ আঙুলের মতো মোটা মেহেদি গাছের মূল অর্ধভাঙা আতপ চাল ধোয়া পানি দিয়ে ঘষে দুই চা চামচ পরিমাণ নিয়ে ৮-১০ চামচ ওই চাল ধোয়া পানি মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে দুই বার খেতে হবে। এভাবে চার-পাঁচ দিন খেলে জন্ডিসে উপশম হয়। এ সময় ডাবের পানি বা আখের রস খাওয়া যাবে না।

শ্বেতপ্রদাহঃ ২৫ গ্রাম মেহেদিপাতা সিদ্ধ করে সেই পানিতে উত্তর বস্তি (ডুস দেয়া) দিলে সাদাস্রাব ও অভ্যন্তরে চুলকানি প্রশমিত হয়। স্থানভ্রষ্ট জরায়ুর ক্ষেত্রেও উপরোল্লিখিত পদ্ধতি প্রয়োগ করলে সুবিধা পাওয়া যায়।

শুক্রমেহ রোগঃ মেহেদী পাতার রস এক চা চামচ দিনে দুই বার পানি বা দুধের সাথে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে উপকার পাওয়া যায়।

মাথা চুলের বিভিন্ন রোগেঃ চুল উঠে যাওয়া বা পাকায় একটি হরীতকী ও ১০-১২ গ্রাম মেহেদিপাতা একটু থেতো করে ২৫০ মিলি পানিতে সিদ্ধ করে ৬০-৭০ মিলি থাকতে নামিয়েছেঁকে ঠান্ডা হলে মাথায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া খুশকি দূর করতেও এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক মেহেদীর ভিতরে একপ্রকারের প্রাকৃতিক এসিড রয়েছে যা এন্টি ফাঙাল, এন্টি মাইক্রোবিয়াল ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা চুলকে লম্বা, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যবান করে। এটি চুলপড়াও রোধ করে। প্রাকৃতিক মেহেদী পেস্ট মাথা ঠান্ডা রাখে ও মাথা ব্যাথা দূর করে। ২৫০ গ্রাম সরিষার তেল একটি পাত্রে সিদ্ধ করার সময় ৬০ গ্রামহেনা পাতা ক্রমান্বয়ে যোগ করা হয়; তারপর একটি কাপড় দিয়ে ছেঁকে বোতলে সংরক্ষণ করা হয়। এটি নিয়মিত মাখলে চুলের স্বাস্থ্যবান বৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরে। এটি মাথার টাকের চিকিৎসারও উপাদান।

স্কীন ওরাল ডিজিজঃ অত্যান্ত উপকারি ভেষজ হেনার পাতা ও ফুল হতে আহরিত তেল অনেক চর্ম-মলম তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চামড়ায় ক্ষত, পোড়া ও চামড়ারফ্যাকাসে হলুদ দাগ চিকিৎসায় অত্যান্ত কার্যকরী ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয়। স্কেবিস, চর্মের চুলকানি জাতীয় ও নখের ফাটার চিকিৎসায় হেনা পেস্টব্যবহার হয়। ত্বকের বিভিন্ন রোগ যেমন- একজিমা, খোসপাঁচড়া, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন, ঘা, কুষ্ঠু, শ্বেতী ইত্যাদি রোগে মেহেদিপাতার রসউপকারী। পাতার রস দিনে দুই বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। এ ছাড়া যাদের গায়ের বা মুখের চামড়া কুঁচকে ঢিলে হয়ে বা ঝুলে গেছে, তারা এইপাতার রস দিয়ে তৈরি তেল মাখলে অনেকটা স্বাভাবিক হবে। গরমকালে যাদের শরীওে ঘাম বেশি হয়ে দুর্গন্ধ হয় তারা বেনামূল মেহেদিপাতা সিদ্ধপানিতে গোসল করলে উপকার পাবেন। দেহ হতে পানি হ্রাস প্রতিরোধ করে; আবার ময়েশ্চার ধারণের ফলে কোন অঙ্গ স্ফিতীর রোধে এক প্রকারডিসল্ভিং ফ্যাক্টর গঠনে কাজে লাগে। হাত-পা জ্বালায় পাতার পেস্ট পুরু করে লাগিয়ে রাখলে উপকার পাওয়া যায়। কারণ মেহেদিতে আছেশীতলকারক উপাদান। গর্ভবতী মায়ের ৮ মাসের সময় তার নাভীসহ গোটা তলপেটে মেহেদীর ভরাট ডিজাইন করলে গর্ভজনিত কারণে চামড়ারফাঁটা ও দাগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

অন্যান্য রোগঃ মাথাব্যাথা, জ্বর ও ভিটামিন-বি এর ঘাটতি জনিত পায়ের পাতার জ্বালা পোড়ার ক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা কমিয়ে স্বস্তি প্রদান করতে পারে। এর ফুলেরপেস্টের সাথে ভিনেগার মিশিয়ে কপালে প্রয়োগ করলে রৌদ্রজনিত কারণে মাথা ব্যাথার উপশম হয়। গলা ব্যাথা উপশমে হেনা পাতা দিয়ে গরম করাপানি দিয়ে কুলকুচা করা যায় বা আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা যায়। অস্থিও জোড়ায় প্রদাহ, ফোলা ও থেতলে যাওয়া অঙ্গে পাতার পেস্ট স্থানীয়ভাবেপ্রয়োগ করা যায়। মেহেদী পাতার রস ও সরিষার তেল মালিশ করলে ব্যাথা কমে। মেহেদী পাতার রস গরম করে দুই ফোঁটা করে চার-পাঁচ দিন কানেদিলে কান দিয়ে পুঁজ পড়া বন্ধ হবে। আবার অনেকে এই পাতার রস দিয়ে তৈরি তেলও ব্যবহার করে থাকেন। অল্প কয়েকটা পাতা থেঁতো করে, গরমপানিতে ফেলে রেখে কিছুক্ষণ পরে ছেঁকে সেই পানির ফোঁটা চোখে দিলে চোখ ওঠা রোগ ভালো হয়। বাকলের রস জন্ডিস, প্লীহা বড় হয়ে গেলে, কুষ্ঠএবং সহজে সারে না এমন চর্মরোগ নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। শরীরে হিমোগ্লোবিন সঠিক পরিমাণে আছে কি না জানার জন্য মেহেদিপাতাব্যবহার করা হয়। মেহেদিপাতা বাটা হাতের তালুতে লাগালে রঙটা লালচে আভা দিলে ভালো, না হলে হিমোগ্লোবিন কম আছে বলে ধারণা করা হয়।

ভেষজ পানির গুণাগুণ

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯ 0

জেনিফার বিনতে হক

 
 ভেষজ পানির গুণাগুণ
প্রতিদিন আমাদের অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কিন্তু এই পানির সঙ্গে কিছু উপাদান মেশালে তা হয়ে ওঠে পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক। তখন একে বলে ডিটক্স ওয়াটার বা ডিটক্স পানি। তাজা ফল, সবজি ও ভেষজ উপাদান টুকরো করে কেটে স্বাভাবিক তাপমাত্রায়, হালকা গরম বা শীতল পানিতে নির্দিষ্ট সময় ভিজিয়ে রেখে এই মিশ্রণ তৈরি করা হয়।

•  ডিটক্স পানি সারা দিন শরীরকে সতেজ ও শীতল রাখতে সাহায্য করে।
•  শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়ক।
•  শরীরের মেদ কোষগুলোর নিষ্কাশনে সাহায্য করে এটি। খাবার হজমে সাহায্য করে ও বিপাক বাড়ায়।
•  যকৃৎ ও ত্বকের জন্য ডিটক্স পানি উপকারী। প্রদাহ কমাতেও এটি সহায়ক।
•  এই পানিতে যে ফল মেশানো হয়, তা মিষ্টি বা চিনির প্রতি আগ্রহ কমায়, রুচি বাড়ায়।
•  ফল ও সবজির ভিটামিন, খনিজ ও অন্যান্য গুণ থাকলেও এতে ক্যালরি বেশি থাকে না।
•  উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতেও উপকারে আসে ডিটক্স পানি।

উপকারী ও জনপ্রিয় কিছু ডিটক্স পানি
•  আদা ও লেবু: এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক ইঞ্চি পরিমাণ আদাকুচি ও আধখানা লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন।

•  লেবু ও পুদিনা পাতা: ১৫ থেকে ২০টি পুদিনা পাতা, পাতলা করে কাটা লেবুর ৫ বা ৬টি টুকরো বা আধখানা লেবুর রস ৫০০ মিলিলিটার পানিতে ভিজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। সকালে খালি পেটে বা দিনে দুই থেকে তিনবার পান করতে হবে।

•  লেবু, শসা ও পুদিনা পাতা: ৮ কাপ পানিতে একটি আধখানা লেবুর রস ও ওই পরিমাণ লেবু কুচি করে কেটে মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর আধখানা শসা কুচি করে ৭টি পুদিনা পাতাসহ ওই পানিতে দিয়ে ২–৩ ঘণ্টা রেখে পান করুন।

•  আপেল, দারুচিনি: ১ লিটার পানিতে একটি আপেল স্লাইস করে কেটে এক টেবিল চামচ দারুচিনি দিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে ঘুমানোর আগে পান করলে শরীরের চর্বি কমে ও বিপাকক্রিয়া ভালো হয়।

•  চিয়া সিড ও লেবু: আধ চা–চামচা চিয়া সিড এক কাপ পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে যে জেল তৈরি হবে, তাতে এক চা–চামচ লেবুর রস ও আরও পানি মিশিয়ে নেড়ে পান করুন। এতে তন্তু বা আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

এ ছাড়া ডিটক্স পানি তৈরিতে স্ট্রবেরি, কমলা, সাইট্রাস ফলের খোসা, জাম্বুরা, বিট ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
লেখক: পুষ্টিবিশেষজ্ঞ

মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯ 0
মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়
নাফিসা আবেদীন

অলংকরণ: আরাফাত করিম
মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়
অলংকরণ: আরাফাত করিমঅনেক মায়ের স্তনে বাচ্চার জন্য দুধের পরিমাণ কম থাকে অর্থাৎ বাচ্চা যত চেষ্টাই করুক না কেন বুকের দুধ তার মুখে কম যায়। দুধ না পেলে বাচ্চার ক্ষুধা মেটে না, চিৎকার ও কান্নাকাটি করে। বাচ্চা অপুষ্টিতে ভোগে। বুকে দুধ কম থাকলে হাত দিয়ে দুধ পাম্প করার চেষ্টা করতে হবে। এটাই সবচেয়ে ভালো উপায় বুকে দুধ আনতে চাইলে।

এ ছাড়া বাজারে বর্তমানে কিছু পাম্প করার মেশিনও পাওয়া যায় সেগুলোও কার্যকারী। প্রোটিন বা ক্যালরির পরিমাণ বাড়িয়ে দিলেই বুকে দুধ আসবে—এটা ভুল ধারণা। তবে অবশ্যই বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় শরীরের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে মাকে সুষম খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ (সামুদ্রিক মাছ নয়) এবং উপকারী চর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে। এতে মায়ের স্তনে দুধের পরিমাণ বাড়বে।
প্রতিটি শিশুর চাহিদা আলাদা। কেউ কেউ অল্প করে বারবার খেতে চায় আবার কেউ কেউ অনেকক্ষণ ধরে খায়। শিশুকে প্রথমে একটি স্তনের দুধ খাইয়ে শেষ করে, তারপর আরেকটি স্তন তার মুখে দিতে হবে। শিশুকে সময় বেঁধে নয় বরং বারবার এবং যতবার শিশু চায়, ততবারই দুধ দিতে হবে। ধৈর্য ধরে খাওয়াতে হবে, খাওয়া শেষের আগেই সরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। কারণ, বাচ্চা দুধ টানলে মায়ের মস্তিষ্কের ভেতরের পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে প্রোলাক্টিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা বেশি বেশি দুধ তৈরির উদ্দীপনা জাগায়।

বাচ্চা যত বেশি দুধ টানবে তত বেশি হরমোন নির্গত হবে এবং তত বেশি দুধ উৎপাদিত হবে। তাই বুকের দুধ তৈরির একমাত্র উদ্দীপনা হলো শিশুর বুকের দুধ টানা। শিশু বুকের দুধ পাচ্ছে না বলে তাকে ফর্মুলা খাবার দেওয়া যাবে না। এতে মায়ের দুধ আরও কমে যাবে এবং শিশুর বুকের দুধ টানার অভ্যাস ও চলে যাবে। কোনো অবস্থায় শিশুর মুখে বোতল বা চুষনী দেওয়া উচিত নয়। এর ফলে শিশু তার মায়ের স্তনের বোঁটা মুখে নিতে চাইবে না। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়া উচিত নয়। এতে বুকের দুধ কমে যেতে পারে। তাই এ সময় অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

লেখক: আবাসিক চিকিৎসক, প্যাথলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

Notice